দ্য শেয়ার নিউজ ডেস্ক : কৃষি বিল নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সংসদ উত্তপ্ত ছিলই। আর মঙ্গলবার প্রায় বিরোধীশূন্য রাজ্যসভায় পাশ হয়ে গেল অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনের সংশোধনী বিল। ইংরেজিতে যাকে বলা হচ্ছে Essential commodities Amendment law । প্রসঙ্গত, গত ১৫ সেপ্টেম্বর লোকসভায় বিলটি পেশ করা হয়েছিল। লোকসভার বাধা সহজেই উতরে যাওয়ার পর আজ বিলটি পেশ করা হয় সংসদের উচ্চকক্ষে। সেখানেও বিলটি পাশ হল বিনা বাধায়। কারণ, আটজন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করার প্রতিবাদে রাজ্যসভার অধিবেশন বয়কট করার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিলেন বিরোধীরা। এবার বাকি শুধু রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সই।

ফার্ম বিল ২০২০ পাশ হওয়ার পর এক অর্থে বদলে গেল অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ধারণা। কারণ, এবার আর থেকে চাল, আলু, পিঁয়াজ, তেল, ডালের মতো বেশ কয়েকটি দৈনন্দিন খাদ্যসামগ্রী আর অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসেবে গণ্য করা হবে না। এর ফলে এই পণ্যগুলি এবার থেকে ইচ্ছেমতো মজুত রাখতে পারবে ব্যবসায়ীরা। মজুত রাখার পাশাপাশি ইচ্ছেমতো দামে সেগুলি বিক্রিও করা যাবে। এক এলাকা থেকে কিনে অন্য এলাকায় নিয়ে বিক্রি করাতেও কোনও বাধা থাকবে না। এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলির কেনাবেচা এবং মজুতদারির উপর এতদিন যে সরকারি নিয়ন্ত্রণ ছিল তা পুরোপুরি উঠে যাচ্ছে। তবে, জরুরি অবস্থা বা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে সরকার চাইলে এই পণ্যগুলির মজুতদারির উপর নিষেধাজ্ঞা নিশ্চয়ই জারি করতে পারবে। অত্যধিক হারে মূল্যবৃদ্ধিও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।সরকারের দাবি, এর ফলে এই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার খুলে যাবে। কর্পোরেট থেকে শুরু করে ছোট ব্যবসায়ীরাও এই কৃষিপণ্যগুলিতে বিনিয়োগ করতে পিছপা হবে না। কর্পোরেটদের আগমন ঘটায় কৃষকরা নিজেদের পণ্যের জন্য আরও বেশি দাম পাবেন। যদিও, বিরোধী শিবির বলছে অন্য কথা। তাঁদের আশঙ্কা, এই বিলটি পাশ হয়ে যাওয়ার ফলে এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলির বাজার পুরোপুরি কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। তাঁরা ইচ্ছেমতো কম দামে কৃষিপণ্য কিনবে এবং মজুত করে রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকটের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সেই পণ্যই পরে আকাশছোঁয়া দামে বিক্রি করবে। এর ফলে কৃষকরা তো ক্ষতিগ্রস্ত হবেনই, মধ্যবিত্তের পকেটেও টান পড়বে। ভবিষ্যত বলবে, মোদী সরকারের এমন একটা বিলের পর দেশের কৃষক এবং সাধারণ মানুষদের ভাল হয় নাকি খারাপ হয়। আপাতদৃষ্টিতে কিন্তু, সরকারের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই মত দেশের কৃষক এবং সাধারণ মানুষের। যদি না তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কথা বলেন। কিন্তু, সবকিছুরই তো সিদ্ধান্ত সঙ্গে-সঙ্গে নিয়ে নির্ভুল হওয়া যায় না। তাই বিরোধীতা সত্বেও বিল যখন পাশ হয়েই গেল। এবং শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতির সই প্রয়োজন। তখন ভবিষ্যতই বলুক ফার্ম বিল ২০২০ করে মোদী সরকার সাধারণ মানুষ এবং কৃষকের উপকার করেছিল নাকি….।