দ্য শেয়ার নিউজ ডেস্ক : মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে সূর্যোদয় দিবসের বর্ষপূর্তি। ভূমি উচ্ছেদ কমিটির ডাকে প্রতিবছরের মতো এবারও শহিদ স্মরণ সভা করলেন আন্দোলনের অন্যতম মুখ, রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর এই অরাজনৈতিক সভার পালটা হিসেবে সোমবারই দলীয় সভা করার কথা ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। সেটাও হল নন্দীগ্রামেই। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম দাবি করেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নন্দীগ্রাম আন্দোলন হয়েছিল। এই আন্দোলন মমতার আন্দোলন। তাঁর এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার ভূমি উচ্ছেদ কমিটির সভা থেকে নাম না করেই একে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন বলে চিহ্নিত করলেন শুভেন্দু। এখানেই শেষ নয়, ১৩ বছর পর তৃণমূল এই প্রথম দলীয় স্তরে ১০ নভেম্বর শহিদ দিবস পালন করছে।

আসলে শুভেন্দুর অরাজনৈতিক কর্মসূচির চাপে পড়েই যে শাসকদল তৃণমূল এই সভা করছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর সেই বিষয় ইঙ্গিত করেই শুভেন্দু এদিন বলেন, এতদিন পরে নন্দীগ্রামকে মনে পড়ল? ভোটের আগে এলে শুধু হবে না, ভোটের পরেও আসতে হবে। তবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হল, এদিন নন্দীগ্রামের সমস্ত শহিদ পরিবারের সদস্যরাই ছিলেন শুভেন্দুর মঞ্চে। আসলে শুভেন্দু অধিকারী যে এই সভার কর্মসূচি নন্দীগ্রামের শদিদদেরই উতসর্গ করেছেন। তাঁর ফলও পেলেন। অন্যদিকে তৃণমূলের মঞ্চে হয়তো ছিলেন সংখ্যায় বেশি নেতা। কিন্তু, নন্দীগ্রামে সূর্যোদয় দিবসের বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানের প্রাণটাই যেন ছিল শুভেন্দুর সভায়। আর শুভেন্দু নিজের বক্তব্য শেষ করেছেন ভারতমাতা জিন্দাবাদ বলে।

নন্দীগ্রামের আন্দোলন কারও নয়, স্বতঃস্ফূর্ত। তিনি বহুদিন ধরে এই কর্মসূচিতে আসেন, চেনা বামুনের পৈতে লাগে না। ভোটের আগে এলে শুধু হবে না, ভোটের পরেও আসতে হবে। নাম না করে নন্দীগ্রামের তেখালিতে শহীদ স্মরণের মঞ্চ থেকে এক নিঃশ্বাসে ঝোড়ো বক্তৃতায় তৃণমূল নেতৃত্বকে আক্রমণ করলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার সকালে এই অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে নিজের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে স্পষ্ট করে কিছুই বললেন না তিনি। তবে কিছুটা ইঙ্গিত রেখে তিনি বললেন, এটা রাজনীতির মঞ্চ নয়, এখানে কিছু বলবেন না। কোথায় তাঁর স্বাচ্ছন্দ্য, কোথায় চলার পথে চড়াই উতরাই, তা রাজনীতির মঞ্চেই তিনি বলবেন। আরও একটা বিষয় না বললেই নয়। এ দিনের সভায় শুভেন্দু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম একবারও মুখে আনেননি। কিন্তু ফিরহাদ হাকিমরা তাঁকে কটাক্ষ করেই যাচ্ছেন। মঙ্গলবারও ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, মিরজাফর তখনও ছিল, আজও আছে। শুধু আমি-আমি করে কিছু হয় না। এখন দেখার শুভেন্দু অধিকারি রাজনীতির আঙিনায় দাঁড়িয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাঁকে করা ক্রমাগত আক্রমণের জবাব কীভাবে দেন।